স্ত্রী’র আপন ছোট ভাই (শ্যালকের স্ত্রী) রত্নাকে কু-প্রস্তাব, ভয়ভীতি অবশেষে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধভাবে শশুর বাড়িতে অবস্থানের কারণে গ্রামবাসীর তোপের মুখে ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কথিত বউ নিয়ে উধাও হলেন দুলাভাই লাল্টু।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মাইলমারী গ্রামে। এঘটনায় গৃহবধূর স্বামী মরিচা প্রবাসী ইলিয়াস হোসেন ও শশুর ময়েজ উদ্দীন কঠোর বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বছর ২ পূর্বে গাংনী উপজেলার মাইলমারী সর্দারপাড়ার ময়েজ উদ্দীনের ছেলে মরিচা প্রবাসী ইলিয়াসের সাথে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয় একই উপজেলার হিন্দা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে রত্নার সাথে। যে বিয়ের ঘটকও ছিলেন লাল্টু। রত্নার স্বামী বিদেশে থাকার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করেই পূর্বের স্ত্রী ইলিয়াসের বোন রুপালী ও রত্নাকে (রুপালীর ভাবী) নিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছেন ইলিয়াসের দুলাভাই গাংনী উপজেলার ভোলারদাড় গ্রামের ছেকেন্দারের ছেলে রাজমিস্ত্রী লাল্টু। অবৈধভাবে বসবাসের কারণ জানতে চাইলে রত্নাকে বিয়ে করেছেন বলে জানান। তবে বিয়ের কোন কাগজপত্র দেখাতে না পেরেও অনৈতিক কর্মকান্ডে চালিয়ে যাচ্ছেন লাল্টু। যে কারণে গত মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি), রাত ৯ টার দিকে গ্রামবাসীরা ঘেরাও করে লাল্টুর বাড়ি। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সুকৌশলে দু’জনে পালিয়ে যায়। লাল্টু’র কারণে ইতিপূর্বে ইলিয়াসের আরও একটি বউয়ের সংসার ভেঙ্গেছে বলেও জানা যায়।
ময়েজ উদ্দীনের মেয়ে রুপালী জানান, আমার স্বামীর ভালো লেগেছে তাই ভাবীকে বিয়ে করেছে। এটা আমি মেনে নিয়েছি।
রত্না জানান, আমি আড়াই মাস পূর্বে ইলিয়াসকে তালাক দিয়েছি। পরে লাল্টুকে বিয়ে করি। পারিবারিক চাপে লাল্টুকে তালাক দিই এবং আবারও বিয়ে করেছি। তবে প্রায় মাসখানেক পূর্বেও এলাকাবাসীরা একই বিষয় নিয়ে জড়ো হলে সে সময় রত্না জানান, লাল্টু আমাকে বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো যার প্রেক্ষিতে তাকে বিয়ে করেছি (যার ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত)।
লাল্টু জানান, তওবা পড়েও তো বিয়ে হয়। তিনি মাসখানেক পূর্বের ঘটনার সময় তাদের বিয়ে হয়ছিল না আবার জানান হয়েছে। কবে বিয়ে হয়েছে এতেও গরমিল পাওয়া যায়। একইসাথে ইলিয়াসের সাথে বিয়ে, তালাক এবং লাল্টুর সাথে বিয়ে, তালাক এবং আবারও বিয়ের কোন কাগজপত্রও দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ময়েজ উদ্দীন জানান, যেহেতু ঘরে মেয়ে রয়েছে সে হিসেবে ছেলের বউয়ের সাথে মেয়ে জামাইয়ের অনেক কিছু জেনেও বলা সম্ভব হয়না। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন।
ইলিয়াস জানান, রত্না আমাকে তালাক দেওয়ার পর তার বাবা-মা, খালু ও মামা মিলে আবারও ১ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে দেয় আমার সাথে। যা আমার বাবা-মাও জানেনা। তিনি জানান, বোনের ঘরে দুলাভাইয়ের দু’মেয়ে রয়েছে। এক মেয়ের বিয়েও সম্পন্ন হয়েছে। একারণে আমি চুপ রয়েছি। কিন্তু দুলাভাই ভাবেনি আমার কথা। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাককে ফোন করা হলে তিনি জানান, কার বউ কে নিয়ে গেলো যেহেতু এডাল্ট মানুষ, এখানে পুলিশের কি করার আছে। তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি দেখার জন্য জানান।
সর্বশেষ এলাকাবাসী ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রত্নাকে নিয়ে লাল্টু সুকৌশলে পালিয়ে যায়।
বিয়ের কোন কাগজপত্র না থেকেও অবৈধভাবে শ্যালকের বউকে নিয়ে সংসার করা নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় অব্যাহত রয়েছে। তিনারা লাল্টুকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।