মেহেরপুরে প্রথমবারের মতো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মামলার শুনানি, উপস্থিতি এবং সাক্ষ্যগ্রহণসহ সব কার্যক্রম পরিচালনা করে স্মার্ট বিচার বিভাগ যাত্রায় নতুন মাত্রা সৃষ্টি করলেন মেহেরপুরের এক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহর আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এসআই আবুল হাসেম ২০২১ সালে মেহেরপুর সদর থানায় কর্মরত অবস্থায় মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর জে.আর.-২৯৭/২১ (রাষ্ট্র বনাম শ্রী পেনাতোশ গং)। বদলিসূত্রে বর্তমানে তিনি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত। এর আগে ৪টি তারিখ তার সাক্ষ্যের জন্য দিন ধার্য থাকলেও তিনি উপস্থিত হতে
এ কারণে মামলাটি নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হচ্ছিল। এজন্য আদালত ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ এবং চলতি বছরের ২০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জারিকৃত প্রাক্টিস নির্দেশনার আলোকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার দুই আসামি শ্রী মনা হালদার ও শ্রী পেনাতোশ হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ। মেহেরপুরে প্রথমবারের মতো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ পুলিশের ওপর হামলার পর হাতকড়াসহ পালিয়ে গেল আসামি আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. জাহাঙ্গীর জানান, ভিডিও কনফারেন্সে সাক্ষ্যগ্রহণের আদেশটি এজাহারকারী ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে ই-মেইলের মাধ্যমে জুম অ্যাপসের মিটিংয়ের তারিখ, সময়সহ বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ই-মেইলে এজাহার, জব্দ তালিকাসহ সংশ্লিষ্ট কাগজাদি প্রেরণ করা হয়েছিল। আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। ফলে মামলাটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। অথচ এই সাক্ষীর জন্য মামলাটি দীর্ঘদিন পেন্ডিং ছিল।মামলার সাক্ষী এসআই আবুল হাসেম বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণকালে আমি কোনো সমস্যা অনুভব করিনি। আদালতে আমরা যেভাবে কাজ করি সেভাবেই এই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত, পুলিশসহ সবার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।মেহেরপুরের কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মানস রঞ্জন দাস বলেন, নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। পুলিশের অনেক কর্মকর্তারা বদিলজনিত কারণে সময়মতো সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেন না। এতে মামলা নিষ্পত্তি হতে বিলম্ব হয়। ডিজিটাল এ পদ্ধতির কারণে মামলা জট যেমন কমবে তেমনি সরকারি টাকার খরচও কমবে। মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খ.ম হারুন বিন ইমতিয়াজ জুয়েল সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করায় মামলা জট কমবে। এতে জনগণ উপকৃত হবে এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ও কমবে। এ পদ্ধতিতে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্য বলেন, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্টিস নির্দেশনা আদেশের বলে মেহেরপুরে প্রথম ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুনানি হলো। এর ফলে মামলার জট কমার পাশাপাশি সাধারণ জনগণও উপকৃত হবে।