খুব টানাটানির সংসার। আজ থেকে প্রায় ৪২ বছর আগে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো, আর পান্তা আনতে নুন অবস্থা এমনই। পরিবারের অন্ন জোটাতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সেখানে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ দেয়া মানে তার পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য। তবে, এতো অভাব ও শত কষ্টের মধ্যে থেকেও দমে যাননি। ছোট্র ব্যবসা তিলের খাজা বিক্রি করেই হয়েছেন সফল। করিয়েছিলেন ছেলে-মেয়েদের উচ্চ-শিক্ষায় শিক্ষিত, হয়েছেন নিজে সাবলম্বী। বলছিলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের মৃত-ওলিউর ওরফে (ভিখু’র) ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের কথা।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রথমে পাঁচ কেজি আখের গুড়ের তিলে খাজা বানিয়ে হাটে বাজারে বিক্রি করা শুরু করি। আস্তে আস্তে ব্যবসা ভালো হয় ও ব্যবসার পরিধি বাড়ে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথমে পায়ে হেঁটে তারপরে ভ্যান গাড়িতে তারপরে মোটরসাইকেল নিয়ে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করে থাকেন সুস্বাদু তিলে খাজা। এলাকায় তার তিলে খাজার বেশ সুনামও রয়েছে
সংসার জীবনে এক স্ত্রী, পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে৷ ছোট ছেলে ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করছেন, বাকি চার ছেলেরা সবাই দাখিল পর্যন্ত লেখাপড়া জানে। কর্মজীবনে তার চার ছেলে মিষ্টি বিক্রেতা, আব্দুর রাজ্জাকের বাবার রেখে যাওয়া ৪০-শতক জমির মালিক ছিলেন তিনি। পরে তিলে খাজা বিক্রি করে ৯-বিঘা আবাদি জমি ক্রয় করেছেন, দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, চার ছেলেকে পাকা ছাদের বাড়ি করে দিয়েছেন। কিছুদিনের জন্য মাইক্রোও কিনেছিলেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে হজ্জ করেছেন আব্দুর রাজ্জাক। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের ৫ কাঠা জমিও দান করেছিলেন তিনি। পরে উক্ত জমিতে স্থান সংকলন না হওয়ায় মাদ্রাসা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।