মেহেরপুরের গাংনীতে হাসিনা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় পান্না খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে হাসপাতালটি বন্ধ ও মালিক হাফিজুর রহমান কে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা জরিমান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। দন্ডিত হাফিজুর গাংনী উপজেলা শহরের থানাপাড়ার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেল ৪ টার দিকে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মহি উদ্দীন, গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুপ্রভা রাণী, গাংনীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাদির হোসেন শামিম এ অভিযান পরিচালনা করেন।
এসময় সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন না থাকা ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা না মানার অভিযোগে হাসপাতালটিকে বন্ধ ঘোষনা করা হয়। একই সঙ্গে হাসপাতালের মালিক হাফিজুর রহমানকে ১ বছরের জেল ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর সিভিল সার্জন মহোদয়কে নিয়ে অভিযুক্ত হাসপাতালটি পরিদর্শন করি। হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখতে পাই সেখানে জীবনের ঝুকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আমরা পাইনি। এছাড়া যে সকল নির্দেশনা মেনে অপারেশন থিয়েটারসহ হাসপাতাল পরিচালনার কথা তার কিছুই এখানে দেখতে পাওয়া যায়নি। এমনকি হাসপাতালটির ২০১৯-২০ অর্থ বছরের পর রেজিস্ট্রেশনও নবায়ন করা হয়নি। তাই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনের ৫২ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাসপাতাল বন্ধ করেছেন। একই সঙ্গে মালিকের ১ বছরের জেল ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার গাংনী উপজেলার দেবিপুর গ্রামের সেলিমের স্ত্রী পান্না খাতুনের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে তাকে হাসিনা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। পরে তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন চিকিৎসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ইমরান। প্রসূতি ও তার নবজাত সন্তান প্রথম দিকে সুস্থ থাকলেও কিছুক্ষণ পর প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অন্য চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান রিংকু তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময় পথের মধ্যে মারা যান ওই প্রসূতি। তবে সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানটি জীবিত রয়েছে।